MECHANICAL

এক নজরে ডিজেল ইঞ্জিনের ট্রাবল শুটিং চার্ট। 

১। কম্প্রেশন কম :–

ইঞ্জিন সিল্ডিারের কমপ্রেশন কম হলে জ্বালানীকে পোড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত তাপ তৈরী করতে পারবে না। ফলে ইঞ্জিন স্টার্ট নিতে কষ্ট হবে। (ডিজেলের ফ্লাশ পয়েন্ট ২১০০ সেঃ) ইঞ্জিন অতিরিক্ত সময়ে চললে এ সমস্যা  হতে পারে। সাধারণত: ঠান্ডা ইঞ্জিনে কম্প্রেশান টেষ্ট করতে হয়।  কম্প্রেশান প্রেসার সাধারণত (২০-৩০) বার বা (৩০০-৫০০)পি-এস- আই । যদিও আর্দশ মান হল (২৪-২৭) বার বা (৩৫০-৪০০)পি-এস- আই  তথাপিও প্রতিটি সিলিন্ডার থেকে সিলিন্ডরের কম্প্রেশান পার্থক্য ৩ বার বা (৫০ পি-এস- আই ) এর বেশী হওয়া উচিত নয়।

২। ফুয়েল প্রসার কম :–

লো ফুয়েল প্রেসার হতে পারে যদি ইঞ্জেকটার পর্যন্ত ফুয়েল সাপ্লাই কম হয় অথবা ইঞ্জেকটার ক্ষয় হয়ে যায় কিংবা ফুয়েল প্রেসার যদি ধরে রাখতে না পারে। চেক করার ভাল উপায় হলো তিনটা যায়গায় ফুয়েল সাপ্লাই চেক করা:-

ট্যাংক থেকে ফুয়েল ইঞ্জেকশান পাম্প পর্যন্ত কোথাও লো প্রেসার হলো কিনা । ইঞ্জেকশান পাম্প থেকে লিফট পাম্প এর প্রেসার (৩-৭) পি এস আই থাকা উচিত।
ইঞ্জেকশান পাম্প থেকে ইঞ্জেকটর পর্যন্ত ফুয়েল ডেলিভারী পরিমান থাকবে প্রায় ১৭৫ এটমোষ্ফেরিক প্রেসার।
একবার যদি ফুয়েল নিদিষ্ট চাপে ইঞ্জেকটারে দেয়া হয়, ইহা অবশ্যিই নিডেলকে সুন্দর ভাবে সিলিন্ডারের ভিতরে বাস্পাকারে স্প্রে করতে পারবে ।

৩) ক্র্যাঙ্কিং স্পীড কম / নষ্ট ব্যাটারী :–

যদি ইঞ্জিন আস্তে আস্তে ঘোরে, ইঞ্জেকশান পাম্প যথেষ্ট ফুয়েল প্রেসার তৈরী করতে পারে না। পিষ্টন স্পিড এতই কম হয় যে, কম্পাশ্বন করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা তৈরীকরতে পারে না। ফলে ইঞ্জিনই ষ্টার্ট নিতে পারে না । সাধারণ শীতকালে এ সমস্যাটা বেশী হয়, তাছাড়া ব্যাটারী টার্মিনাল করোশান বা অক্সাইড জমে গেলেও এ সমস্যা হয়। তাই, ব্যাটারী সব সময ফুল চার্জ এবং টার্মিনাল যেন ভালভাবে লাগানো থাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৪) থার্মোষ্ট্যাট কিংবা গ্লো -প্লাগ ( প্লাগ- হীটার) :–

যখন ইঞ্জিন ক্র্যাংক করা হয়, তখন থার্মোষ্ট্যাট বা গ্লো প্লাগ (যদি ব্যবহৃত হয়) এর কাজ হল কম্বাশ্বন চেম্বারের বাতাসকে গরম করা । এগুলো সমস্যা করলে ইঞ্জিন চালূ হতে কষ্ট হয় এবং সাদা ধোয়া বের হয়।

৫) জ্বালানী সরবারহ নিম্ন চাপের বা কম :–

যদি ফুয়েল ট্যাংক যথেষ্ট জ্বালানী না থাকে অথবা ফুয়েল পাইপ লাইনে অনেক জোড়া, কুচাকানো বা ব্যান্ড থাকে তবে ফুয়েল সরবারহ বাধা প্রাপ্ত হয়। অনেক সময় ফুয়েল ট্যাংকের ক্যাপএ যে  ব্রেদার থাকে সেটি ব্লক হয়ে ট্যাংকে ভ্যাকুয়াম প্রেসার তেরী করে ও ফুয়েল সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে।

৬) কুলষিত বা নিম্ন মানের জ্বালানী :–

নিম্ন মানের জ্বালানী এবং জ্বালানীতে পানি মিশ্রিত থাকলে তা ইঞ্জেক্টর এবং ইঞ্জেকশান পাম্পের জন্য ক্ষতিকারক। নিয়মিত ফিল্টার পরিবর্তন এবং তলানী ড্রেন করা উটিত । ডিজেলের সাথে অন্য ফুয়েল (বিশেষ করে কেরোসিন) থাকা একটি কমন সমস্যা । এ করনে ও বেশীর ভাগ পাম্প ও ইঞ্জেক্টর নষ্ট হয়ে থাকে।

৭) ডিজেলে বাতাসের মিশ্রন :–

এটি কুলষিত বা নিম্ন মানের জ্বালানীর মিশ্রনের মতোই সমস্যা। ক্রটি যুক্ত বা লুজ পাইপের জন্য সিস্টেমে বাতাস ঢুকে যায়। কিন্ত ময়লা ফুয়েল ফিল্টার বা ক্রটি যুক্ত হেড এসেমব্লির জন্যও ইঞ্জিন চালু নিতে সমস্যা হয়। ফুয়েল লাইনের ইনলেটে এবং রিটার্ন লাইনে বেনজিও বোল্ট থাকতে পারে যার মধ্যে একটি ফুয়েল যাবার ছিদ্র থাকে, এটি ইনজেকশান পাম্পের ফিল্টার হেডের ব্যাক প্রেসার তেরী করে রাখে। ফলে পাইপ সব সময় ফুয়েলে পরিপূর্ন থাকে, বাতাস জমতে পারে না।  এটি অবশ্যিই ফুয়েল ট্যাংর্কে তলায় থাকবে।

৮) ফুয়েল ফিল্টার বা ফুয়েল পাইপ ব্লকড :–

ময়লা ফুয়েল রাখার পাত্র/ট্যাংক/ফুয়েল এর কারনে ফুয়েল ফিল্টার লিফট পাম্প ব্লক  হয়।  এ গুলো সিডিউল মাফিক পরির্বতন বা পরিস্কার করতে হয়।  অনেকে ডিজেলের সাথে বায়ো ডিজেল মিশ্রন করে যাতে খুব দ্রুত ফিল্টার ব্লক হয়ে যায়।

৯) ইঞ্জেক্টর নষ্ট :–

ইঞ্জেক্টর নষ্ট হবার সবচেয়ে বড় কারণ হলো নীডেল গুলো ক্ষয় / পুরাতন হয়ে যাওয়া এবং নিডেলে কার্বন ডিপোজিট পড়া । ইঞ্জেক্টরে স্প্রে দুর্বল বা ঠিকমত না হলেও এ রকম হয়। এতে ইঞ্জিন স্টার্টিং এ  খুব সমস্যা হয়। ইঞ্জেক্টার ও সিডিউল মাফিক সার্ভিস করতে হয়। ডিজেল এডিটিভস (ক্যামিক্যাল) দিলে এই সমস্যার কিছুটা সমধান হয়। ইঞ্জেক্টারের স্প্রিং দুর্বল কিনা তাও চেক করতে হয়।

১০) ইঞ্জেকশান পাম্প নষ্ট :–

এই পাম্প সমস্যা করলে  “লো ফুয়েল প্রেসার ’’ সমস্যা দেখা দিবে । ট্রান্সফার পাম্পের ব্লেড ক্ষয় হয়ে গেলে, প্লাঞ্জার আটকে গেলে বা ক্ষয় হয়ে গেলে, রেক আটকে গেলে, কোল্ড ষ্টার্ট ডিভাইস আটকে গেলে বা কাজ না করলে ।

১১) ফুয়েল লিফট পাম্প নষ্ট :–

লিফট পাম্পের কিছু জানা সমস্যা গুলো হচ্ছে স্প্লিট ডায়ফ্রাম লিকিং নন রির্টান ভাল্ব লুজ বা সরে যাওয়া। লিফট পাম্প নষ্ট হলে  ‘‘লো ফুয়েল প্রেসার ” সমস্যা হবে।

১২) এয়ার ফিল্টার অপরিস্কার বা ব্লক:–

ময়লা ও ব্লকড এয়ার ফিল্টার এলিমেন্ট একেবারেই ইঞ্জিনে বাতাস ঢুকতে দেয় না।  ফিল্টার গুলো  তৈলাক্ত হোক  বা শুকনা হোক , নিদিষ্ট সময় পর অবশ্যিই পরির্বতন করা উচিত।

১৩) টার্বোচার্জার ত্রুটিপূর্ণ :–

আইডেল স্পীড বা আইডেল লোড এ বেশীক্ষন ইঞ্জিন চালালে, ঠিকমত মেইনটেন্যান্স না করলে, সঠিক মানের লুব ওয়েল ব্যবহার না করলে টার্বোচার্জারের ক্ষতি হয়।  একটি  টার্বোচার্জার ফুললোডে মিনিটে প্রায় ১,৬০,০০০ বার ঘুরে, তাই এর সঠিক লুব্রিকেশান প্রযোজন তা না হলে প্রথমেই এর বিয়ারিং এবং সিল গুলো নষ্ট হযে যাবে। আর একটি সমস্যা হয় টার্বোচার্জার থেকে আগত বা নির্গত এয়ার হোজ গুলো যদি ডেমেজ, দূর্বল বা লিক করে।

১৪) ইঞ্জেক্টর ওয়াশার লিকিং :–

ইঞ্জেক্টর ওয়াশার লিক করলে নিম্ন লিখিত লক্ষন গুলো দেখা দিতে পারে। ষ্টার্টিং কষ্টকর বা জটিল, অসম আইডেল স্পীড, হান্টিং করে রানিং করা, আইডেলে ধোয়া বের হওয়া, ইঞ্জেক্টরে কালো ময়লা পাওয়া, অনিয়মিত শব্দ ইত্যাদি ।

১৫) আভ্যন্তরীণ ইঞ্জিন ফল্টঃ-

এটি সাধারনতঃ মেকানিক্যাল ফেইলিউর কে বুঝায়। যেমনঃ পিস্টনে ফাটল ধরা, পিস্টন রিং ক্ষয় বা ভেঙ্গে যাওয়া, অয়েল প্রেশার কমে যাওয়া, অভার হিটিং, ভাল্ব পুড়ে যাওয়া, লাইনারে ফাটল ধরা, লাইনার সিলে লিক করা, হেড গাস কেট পুড়ে যাওয়া, বেয়ারিং ক্ষয়, ভাল্ব সিলে লিক করা ইত্যাদি আরও অনেক কিছু – যা লিখে শেষ হবে না। তাই আভ্যন্তরীণ ইঞ্জিন ফল্ট এর জন্য সবচেয়ে ভাল হয় একজন দক্ষ ইঞ্জিন স্পেশালিষ্ট এর পরামর্শ নেয়া।

Comments

Popular posts from this blog

ডিজেল ইঞ্জিনের ফুয়েল সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?

ডিজেল ইঞ্জিনের বিভিন্ন এলার্ম ও প্রোটেকশান সিস্টেম, সমস্যা ও সমাধান...!!

ডিজেল ইঞ্জিন ও পেট্রোল ইঞ্জিনের পার্থক্য।