ডিজেল ইঞ্জিনের বিভিন্ন এলার্ম ও প্রোটেকশান সিস্টেম, সমস্যা ও সমাধান...!!

ডিজেল ইঞ্জিনের বিভিন্ন এলার্ম ও প্রোটেকশান সিস্টেম, সমস্যা ও সমাধান...!!

 ১. হাই জ্যাকেট ওয়াটার টেম্পারেচার :-

ইঞ্জিনের টেম্পারেচার সাধারণত লোড বাড়া কমার সাথে পরিবর্তিত হয়। ফুল লোডে একটি  ইঞ্জিনের অপারের্টিং  টেম্পারেচার ( ৮৮-৯৯০ সেঃ ) বা ( ১৯০ – ২১০০  ফা) থাকে। এই টেম্পাচার ১০০০ সেঃ হলেই ইঞ্জিন এলার্ম দিবে, কারণ ১০০ সেঃ হচ্চে পানির বয়েলিং টেম্পারেচার।  এই এলার্ম দেবার কিছুক্ষন পরেই শাট-ডাউন এলার্ম দিয়ে ইঞ্জিন ট্রিপ বা বন্ধ হয়ে যাবে। যদি  ইঞ্জিনের রেডিয়েটর আপরিস্কার থাকে,  রেডিয়েটরের ফ্যান বেল্ট যদি লুজ থাকে বা ছিড়ে যায়, পরিমান মত পানি রেডিয়েটরে যদি না থাকে, জ্যাকেট ওয়াটার থার্মোষ্টাট ভাল্বে যদি ঠিক ভাবে কাজ না করে কিংবা ইঞ্জিনের লোড যদি হঠাৎ বেড়ে যায়, তা হলে ইঞ্জিনের হাই জ্যাকেট ওয়াটার টেম্পারেচার এলার্ম আসতে পারে।

৩. লুব ওয়েল প্রেসার লোঃ –

যদি লুব ওয়েল পাম্প ঠিক ভাবে কাজ না করে, লুব ওয়েল ফিল্টার জ্যাম বা অপরিস্কার থাকে অথবা ইঞ্জিন এর সাম্প এ যদি পরিমান মত লুব ওয়েল না থাকে বা কম থাকে কিংবা লুব ওয়েল লাইনে যদি বাতাস লক হয়ে থাকে তাহলে “লো লুবওয়েল প্রেসার” এলার্ম আসবে । লুব ওয়েল প্রেসার এর সীমা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ কেপিএ এবং সর্বনিম্ন ২৭৫ কেপিএ। এর বাহিরে গোলেই ইঞ্জিন ট্রিপ করে যাবে। স্বাভাবিক লুব ওয়েলের প্রেসার হচেছ ৪২২ কেপিএ।

৪. আন্ডার /অভার ফ্রিকোয়েন্সী বা ভোল্টেজ :-

ইঞ্জিন চলার সময় ফ্রিকোয়েন্সী ৫০ হার্জ এবং ভোল্টেজ (৪০০-৪১৫) ভোল্ট থাকবে। কিন্ত একটি নির্দিষ্ট সীমার বাহিরে গেলে ইঞ্জিনের ফ্রিকোয়েন্সী, ভোল্টেজ বাড়তে বা কমতে পারে। ইঞ্জিনের স্পীড বেশী কমে গেলে হার্জ এবং ভোল্টেজ কমে গিয়ে ট্রিপ করতে পারে। আবার হঠাৎ করে লোড কেটে গেলে ইঞ্জিন স্পীড বেড়ে গিয়ে অভার ফ্রিকোয়েন্সী কিংবা অভার ভোল্টেজ ট্রিপ করতে পারে। সাধারণত ফুয়েল সাপ্লাই বাধা গ্রস্থ হলে ইঞ্জিনের আর পি এম কমে যায় এবং তখন ইঞ্জিনে লোড থাকলে আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সী বা  আন্ডার ভোল্টেজ এলার্ম  এসে ইঞ্জিন ট্রিপ করে বা বন্ধ হয়ে যাবে।

##ডিজেল ইঞ্জিনের আরও কিছু সমস্যা এবং তা সমাধানের তাৎক্ষনিক উপায়।

১. ইঞ্জিনের আর পি.এম ধীরে ধীরে কমে আসে ইঞ্জিনের লোড কমে যায় এবং এক সময়ে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় :-

এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে সব সময় ভাল   ও ভেজাল মুক্ত ডিজেল ব্যবহার করতে হবে। ফুয়েল ফিল্টার ও ডিজেল ওয়াটার সেপারেটার পরিস্কার রাখতে হবে। পানি ড্রেন করতে হবে।
চালু অবস্থায় ডিজেল ভরা যাবে না। কারণ এতে ট্যাংকের তলার ময়লা ফিল্টার কে জ্যাম করে দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্তি সময় ইঞ্জিন চালানো যাবে না।

২. ইঞ্জিনের জ্যাকেট ওয়াটার টেম্পারেচার বেড়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ :-

ইঞ্জিনের রেডিয়েটরে পরিমান মত পানি না থাকলে।
রেডিয়েটর অপরিস্কার থাকলে।
জ্যাকেট ওয়াটার থার্মোস্ট্যট ভাল্ব বা টেম্পারেচার রেগুলেটার যদি ঠিক ভাবে কাজ  না করে।
হঠাৎ ইঞ্জিনের লোড বেড়ে গেলে।
ইঞ্জিনের ফ্যান বেল্ট ছিড়ে গেলে বা লুজ হয়ে গেলে ।
ইঞ্জিন রুমের আশে পাশের তাপমাত্রা বেশী থাকলে।

##ইঞ্জিন চালু দিতে সমস্যার কিছু কারণ সমূহ :-

স্টার্টিং মটর দুর্বল বা ব্যাটারী দুর্বল স্টার্টিং পাম্প এর প্রেসার কম ।
ডিজেল ফুয়েল প্রেসার কম। সাধারণ ফুয়েল লাইনে বাতাস ঢুকলে এয়ার – লক হলে তা বাইর না করা পর্যন্ত ইঞ্জিন কখনই চালু হয় না। এর জন্য ফিল্টারের বেজমেন্টে এয়ার লক নাট খুলে ফুয়েল প্রাইমিং পাম্প দ্বারা পাম্প করতে হবে। বাতাস ফেনার মতো ডিজেলের সাথে বেরিয়ে আসবে। এভাবে সমস্ত বাতাস বের করে ইঞ্জিন চালু দিতে হবে।
ইনজেক্টার এর সমস্যা থাকতে পারে। তাছাড়া ইনজেকশান পাম্পের ও সমস্যা থাকতে পারে।

Md. Tushar Mahmud
Engineering Services of Bangladesh
(ESB Ltd.), Faridpur.

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

ডিজেল ইঞ্জিনের ফুয়েল সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?

ডিজেল ইঞ্জিন ও পেট্রোল ইঞ্জিনের পার্থক্য।